জলি আহমেদ : নিউইয়র্কে আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস (AABEA)-এর নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের আয়োজনে বর্ণাঢ্য দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। "দ্যা স্টেরলিং" ভেন্যুতে আয়োজিত এই সম্মেলনটি ছিল প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি দৃষ্টান্তমূলক আয়োজন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল “টেকনোলজি ফর এডভান্সমেন্ট”।
সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও স্থপতিরা অংশগ্রহণ করেন। শনিবার (২৩ নভেম্বর) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার, জব ফেরার (চাকরি মেলা),শিশুদের জন্য বিশেষ আয়োজন এবং গালা ডিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের শুরুতেই প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রযুক্তি সেমিনার আয়োজন করা হয়, যেখানে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা তাদের মূল্যবান অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান শেয়ার করেন। চাকরি মেলায় আগতরা নিজেদের কর্মজীবনের উন্নতির জন্য নানাবিধ সুযোগের সন্ধান পান। শিশুদের জন্য একটি মজাদার ইভেন্ট আয়োজন করা হয়, যা শিশুদের জন্য ছিল চমৎকার অভিজ্ঞতা।
ইভেন্টে উপস্থিত অতিথিরা প্রযুক্তির অগ্রগতিতে AABEA-এর ভূমিকা এবং এই ধরনের আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তারা উল্লেখ করেন যে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মেধা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব আরও সুসংহত করছে।
AABEA- এর নিউইয়র্ক চ্যাপ্টার-এর কর্মকর্তারা জানান, এই সম্মেলন প্রবাসী বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার ও স্থপতিদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। তারা ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই ধরনের আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন। সম্মেলনটি শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত জ্ঞান শেয়ার করার ক্ষেত্রই নয়, বরং এটি প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির ঐক্য ও বন্ধন সুদৃঢ় করার এক অনন্য উদাহরণ।
সম্মেলনে AABEA-এর নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের ২০২৩-২৪ কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এস কে আমজাদ হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ট্রেজারার নুরুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত সাহা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আরিফ আহমেদ, নির্বাহী সদস্য মৌসুমা খাতুন, বেলাল হোসাইন ও নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের উপদেষ্টাদের মধ্যে মোহাম্মদ সাদিক, শামীম এ জুয়েল, সামজিদ সিদ্দিকী ও আব্দুল সামাদ আজাদীসহ অন্যরাও উপস্থিত থেকে সম্মেলনের গুণগত মান বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
এ সময় প্রধান অতিথি ড. ফারুক এমএ সিদ্দিকী ও বিশেষ অতিথি আলী মল্লিকের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ক্রেস্ট দেয়া হয় প্রধান বক্তা ইরিক সি ম্যাকফারলেন, বিশেষ অতিথি সুধা মান্নাভা, অনুষ্ঠানের সভাপতি মোহাম্মদ সিদ্দিক, রিজভান খান নাবিল, শামসুল সিদ্দিকী, সাইদুর রহমান রুমি, মো: মামুন, রাকিব উল ইসলাম, শাহিনুর রাহিম, এএনএম রানা চৌধুরী, প্রয়াত ড.সুফিয়ান খন্দকার, সাঈদ জাকির হোসাইন, আহাদ আলী, কামাল শাহীদ, ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল হক, মেরাজ ভুইয়া, মাকসুদ মালিককে।
গালা ডিনার এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় শেষের দিকে। এতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ এবং নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ তৈরি হয়। প্রথমেই আবেয়া নিয়ে একটি থিম গানের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরু করা হয়। পরবর্তীতে শিশুদের বাংলা গানের সাথে মনোরম নৃত্য পরিবেশন মন কেড়েছে অতিথিদে.
অনুষ্ঠানে শেষে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত সংগীত শিল্পী সামিনা চৌধুরী ,পুরনো দিনের নানা সংগীত পরিবেশন ও মঞ্চ নাটকের আয়োজনও ছিলো। পুরো আয়োজনটি প্রাণবন্ত করে রাখেন সঞ্চালক নওশিন এবং তাকে সহযোগীতা করেন সাজ্জাদ শান্তনো!
প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটিয়ে এই ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির অবস্থান আরও সুসংহত করবে বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা।