ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী (বিএসএফ)-এর গুলিতে নিহত বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী খাতুন-এর ১৪তম মৃত্যুদিবস ছিলো ৭ জানুয়ারী। পনের বছর বয়সী ফেলানী খাতুন ২০১১ সালের জানুয়ারীর এই দিনে বাংলাদেশ-ভারত কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ফেলানীর দেহ সীমান্তরেখা বরাবর কাটাতারের বেড়ায় চার ঘন্টা যাবত ঝুলে থাকলেও বিএসএফ তাকে উদ্ধার করেনি। দিনটি বাংলাদেশে ফেলানী দিবস হিসেবে পরিচিত এবং পালিত হয়ে আসছে। ইউএনএ
‘ফেলানী দিবস’ উপলক্ষ্যে নিয়ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশীদের সংগঠন ‘প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশ’ গত ৮ জানুয়ারী বুধবার বিকেলে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সামনে এক প্রতিবাদ সভা ও মানব বন্ধনের আয়োজন করে। উক্ত সভায় বিএসএফ’র নির্বিচারে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা করার তীব্র নিন্দা এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সামনের রাস্তার নামটির নাম ‘ফেলানী সড়ক’ করার দাবী জানানো হয়।
সভাশেষে এ সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি বাংলাদেশ কনস্যুলেটকে প্রদান করা হয়। কন্যুলেটের পক্ষ থেকে মিনিস্টার মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান স্মারকলিপিটি গ্রহন করেন এবং তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছে দেওয়া হবে বলে জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বিশিষ্ট রাজনীতিক ও কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আবদুস সবুর, ‘প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশ’-এর প্রধান সমন্ময়কারী আবদুল কাদের, সদস্য জুয়েল জাকির, সাংবাদিক চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল, মুশফিকুর রহমান, মোহাম্মদ তারিফ ও রাসেল খান বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে ‘প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশ’-এর প্রধান সমন্ময়কারী আবদুল কাদের বলেন, ভারত যদিও আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। কিন্তু ভারতীয়রা যেভাবে সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা করছে এটা সৎ প্রতিবেশী সুলভ আচরণ হতে পারে না। এটা মানবাধিকারের স্পস্ট লঙ্ঘন। আমরা আশা করবো ভারত সরকার বিএসএফ-কে সংযত হতে নির্দেশ দেবে।
কাদের বলেন ‘এতদিন ভারতের তাবেদার ‘আওয়ামী লীগ সরকার’ ফেলানী হত্যার বিচার দাবী করেনি। এখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের সরকার জোড়ালো ভাষায় ফেলানী হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করবে বলে আমরা আশা করছি’।
কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আবদুস সবুর বলেন, ফেলানীকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে এটা নিঃসন্দেহে মানবতাবিরোধী অপরাধ। ফেলানী হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করে তিনি বলেন, ‘ফেলানীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে চার ঘন্টা কাটাতারের ওপর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। তখন তার শরীর থেকে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছিল। বিএসএফ তাকে উদ্ধার করেনি। মৃত্যুর ১৪ বছর পরও ফেলানী হত্যার বিচার হয়নি। তিনি বলেন, আমরা হত্যাকারীর বিচার দাবী করেন।
‘প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশ-এর অন্যতম সদস্য জুয়েল জাকির বলেন, বিএসএফ-কে আরও সংযত ও মানবিক হতে হবে। এটা কোন সভ্য বাহিনীর আচরণ হতে পারেনা। একটি ১৫ বছরের কিশোরী নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। কিন্তু বিচার পায়নি। আমরা ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের সামনের রাস্তাটির নাম ফেলানীর নামে নামকরনের দাবী জানাচ্ছি। এই রাস্তাটির নাম হোক ‘ফেলানী সড়ক’ বা ‘ফেলানী স্ট্রিট’। তাহলে হয়ত তার পরিবার কিছুটা শান্তনা পাবে। বাংলাদেশী হিসেবে দায়বদ্ধতা থেকে আমরা দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ এই দাবী জানাচ্ছি।
সমাবেশ শেষে চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল সংগঠনের পক্ষ থেকে দূতাবাস কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। এসময় ‘প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশের সদস্যবৃন্দ ছাড়াও বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাউন্সিলর ইশরাত জাহান উপস্থিত ছিলেন।