একজাতীয় সামুদ্রিক স্কুইড আকাশে ১০০ মিটারের বেশি উড়তে পারে। আর ওড়ার সময় এর গতি থাকে বিশ্বের দ্রুততম মানব বলে পরিচিত দৌড়বিদ উসাইন বোল্টের চেয়েও বেশি। জাপানের গবেষকেরা গতকাল শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন। জাপানের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জুন ইয়ামামোতো বলেন, প্রাণীটি তার ডানা মেলে আকাশে ভাসার সময় এর গতি থাকে প্রতি সেকেন্ডে ১১.২ মিটার। জ্যামাইকান দৌড়বিদ গত বছর লন্ডন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। ওই দৌড়ের সময় প্রতি সেকেন্ডে তাঁর গতি ছিল ১০.৩১ মিটার। গবেষক ইয়ামামোতো বলেন, ‘বিভিন্ন সময় গুজব ছিল যে স্কুইডকে উড়তে দেখা গেছে, অনেকে তা দেখেছে। ঘটনাটা যে প্রকৃতপক্ষেই সত্যি, তা আর আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি।’ ইয়ামামোকো ও তাঁর সহযোগী গবেষকেরা ২০১১ সালের জুন মাসে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রশান্ত মহাসাগরে প্রায় ১০০টি স্কুইডের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখেন। তাদের জাহাজ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গেই আট ইঞ্চি লম্বা প্রাণীগুলো বিশেষ প্রক্রিয়ায় পিচকারির মতো করে পানি ছুড়ে মারার মাধ্যমে নিজের দেহকে সমুদ্রের ওপর বাতাসে ভাসিয়ে ওড়া শুরু করে দেয়। পানি ছুড়ে মারার জন্য তারা তাদের দেহের চিমনির মতো অংশকে ব্যবহার করে থাকে। গবেষকেরা এ-সংক্রান্ত ছবি প্রকাশ করেছেন। তাতে দেখা গেছে, ২০টির বেশি স্কুইড পানির ওপরে পূর্ণাঙ্গভাবে ভাসছে। ছবিতে প্রাণীগুলোর প্রপালশন জেট থেকে পানির বিন্দু পড়ার দৃশ্য পরিষ্কারভাবেই দেখা যায়। গবেষক ইয়ামামোতো জানান, স্কুইডগুলো প্রায় তিন সেকেন্ড বাতাসে ভেসে বেড়ায় এবং তারা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ মিটারের বেশি উচ্চতায় উঠে যায়। তাঁর বিশ্বাস, প্রাণীগুলো শিকারির আক্রমণ থেকে বাঁচতে এ পথ অবলম্বন করে। তবে ওই অবস্থাতেও প্রাণীগুলো অন্যান্য শিকারির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ইয়ামামোতো বলেন, ‘এই অনুসন্ধানের অর্থ এই যে, স্কুইডকে আর আমাদের কেবল পানিতে বসবাসকারী প্রাণী হিসেবে মনে করা ঠিক হবে না। এটা অতিশয়ভাবেই সম্ভব যে, প্রাণীগুলো সামুদ্রিক পাখির খাদ্যের একটা উৎসও।’ এএফপি।প্রথম আলো