গবেষণা: ৫০টি দেশের চতুর্থ ও অষ্টম গ্রেডের শিশুদের পারদর্শিতা মূল্যায়নে শীর্ষ পাঁচটি দেশ হলো সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইওয়ান, কোরিয়া ও জাপান III
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের নামকরা দেশগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনায় অন্যদের চেয়ে এশিয়ার শিক্ষার্থীরা এগিয়ে। বিশেষ করে গণিত ও বিজ্ঞানে তারা অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষার প্রবণতার (টিআইএমএসএস) ওপর ২০০৭ সালে একটি জরিপে ৫০টি দেশের চতুর্থ ও অষ্টম গ্রেডের শিশুদের পারদর্শিতা মূল্যায়ন করা হয়। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশই পূর্ব এশিয়ার—সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইওয়ান, কোরিয়া ও জাপান। এশীয় শিশুদের এই সফলতার পেছনের কারণ কী? দ্য টিপিং পয়েন্ট অ্যান্ড আউটলাইয়ার্স-এর লেখক ম্যালকম গ্লাডওয়েলের মতে, চীনা, জাপানিজ বা কোরীয়র মতো এশীয় ভাষাগুলো শিশুদের গণিতে পারদর্শিতার ক্ষেত্রে সহায়ক। গণনা করার প্রশ্নে ইংরেজির মতো ভাষা সহায়ক নয়। ইংরেজিতে ১০০ পর্যন্ত গুনতে ২৮টি অনন্য শব্দ জানতে হয়; যেখানে চীনা, জাপানিজ বা কোরীয় ভাষায় মাত্র ১১টা জানলেই হয়—এক থেকে ১০ ও ১০০। এশীয়দের গণিত ও বিজ্ঞানে পারদর্শিতার বিষয়ে আরও চারটি ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। প্রথমত, সন্তানের লেখাপড়ায় মা-বাবার চাপ। তাঁরা ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের কলা, ভাষা বা খেলাধুলার চেয়ে গণিত ও বিজ্ঞানে পারদর্শী করে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন। দ্বিতীয়ত, এশীয় শিশুদের একাডেমিক শিক্ষার জন্য বেশি ব্যস্ত রাখা হয়। দেখা যায়, স্কুল ছুটি হওয়ার পর প্রায় সব শিশু দীর্ঘ সময় গৃহশিক্ষকদের কাছে কাটায়। এই সময়ের বেশির ভাগই তারা গণিত শিখতে ব্যয় করে। তৃতীয়ত, এশীয় স্কুলগুলোর বিজ্ঞান ও গণিতের পাঠ্যসূচি তুলনামূলক অনেক কঠিন। ব্রিটিশ কেমিস্ট সোসাইটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে ধরনের সমস্যা যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়, চীনের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের আগেই তা করে থাকে। চতুর্থ কারণটি হতে পারে, এশিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তিতে উচ্চ প্রতিযোগিতা। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড।প্রথম আলো