Saturday - April 27, 2024 12:35 PM

Recent News

বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউইয়র্কের ধর্মীয় উৎসবমুখর কিরাত প্রতিযোগিতা ও ইফতার মাহফিল (ভিডিও সহ)

ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক :  ধর্মীয় উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউইয়র্কের বার্ষিক ইফতার মাহফিল ও কিরাত প্রতিযোগিতা। সাংবাদিক, কবি, লেখক, সাহিত্যিক, ডাক্তার, এটর্নী, মূলধারার রাজনীতিক, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সোসাইটির সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ এবং সর্বস্তরের প্রবাসীর অংশগ্রহণে অংশগ্রহণে মাহফিলটি ছিলো উৎসবমুখর। এতে হাজারোধিক প্রবাসী অংশ নেন। অনুষ্ঠানে আগামী বছরের কিরাত প্রতিযোগিতার পুরষ্কারের স্পন্সর ঘোষণা দেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক লায়ন শাহ নেওয়াজ।
সিটির উডসাইডের তিব্বতিয়া কমিউনিটি সেন্টারে ২৪ মার্চ রোববার এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলের আগে কিরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। আমন্ত্রিত অতিথি ও স্পন্সরগণ পুরষ্কার বিতরণ করেন। মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম ও খতিব মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী। কিরাত প্রতিযোগিতার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আইটিভি’র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহের, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক লায়ন শাহ নেওয়াজ,এটর্নী মঈন চৌধুরী, অনলাইন পোর্টাল নিউইয়র্ক বাংলা.কম সম্পাদক আকবর হায়দার কিরণ, সোসাইটির সহ সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সোসাইটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, বিয়ানীবাজার সমিতি ইউএসএ’র সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম অপু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া বলেন, সবার সহযোগিতায় অসম্ভবকে সম্ভব করা হয়েছে। এজন্য তিনি সকল প্রবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং সহযোগিতা অব্যহত রাখার অনুরোধ করেন। প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ সোসাইটির সদস্যপদ নবায়ন করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী ৩০ জুন সোসাইটির সদস্যপদ গ্রহণের শেষ তারিখ।
সোসাইটির কর্মকর্তারা জানান, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় এবছরের ইফতার মাহফিল ও কিরাত প্রতিযোগিতা সফল হয়েছে। ৮০০ আসনের তিব্বতিয়া কমিউনিটি সেন্টারে তিল ধারণনের ঠাঁই ছিলো না। অনেক প্রবাসীকে বসার জন্য অতিরিক্ত চেয়ার দিতে হয়। সবমিলিয়ে এক হাজার থেকে ১২০০ প্রবাসী এবারের ইফতার মাহফিলে অংশ নেন। আর প্রবাসীদের ইফতারের জন্য তৈরী খাবার সোসাইটির কর্মকর্তারা নিজ উদ্যোগেই সেন্টারের রান্না ঘরে রান্না ও তৈরী করেন। এই আয়োজনের বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন সোসাইটির সিনিয়র সহ সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নওশেদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম ভূঁইয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডা. শাহনাজ লিপি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ টিপু খান, সাহিত্য সম্পাদক ফয়সাল আহমদ, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক মাইনুল উদ্দিন মাহবুব, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, কার্যকরী সদস্য ফারহানা চৌধুরী, মোহাম্মদ আখতার বাবুল, আবুল বাশার ভুইয়া, সুশান্ত দত্ত, মোহাম্মদ সাদী মিন্টু ও শাহ মিজানুর রহমান।

নিউইয়র্কে ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা পুনরায় চালুর দাবী
বর্তমান কনসাল জেনারেল আসার পর আমরা দুই তিনবার মিটিং করেছি ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা পুনরায় চালুর জন্য কিন্তু উনারা কিছুতেই সেবাটা দিচ্ছেনা। এতে করে ব্রংকস্ এবং ব্রুকলিনে প্রবাসী বাংলাদেশীরা এই সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদায়ী কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলামের সময়েও ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা চালু ছিলো। বর্তমান কনসাল জেনারেল আসার পর এই সেবা বন্ধ হয়ে যায়।
২৪ মার্চ রোববার কুইন্সের উডসাইডের তিব্বতি কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ সোসাইটির ইফতার মাহফিলে সমাপনী বক্তব্যে ক্ষুব্ধ কন্ঠে কথাগুলো বলেন সভাপতি আব্দুর রব মিয়া। এসময় তিনি উপস্থিত সহস্রাধিক প্রবাসী কমিউনিটি ব্যাক্তিত্বের উদ্দেশ্যে বলেন, ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা চালু না হলে প্রয়োজনে আপানাদেরকে সাথে নিয়ে কনসাল জেনারেল অফিসের সামনে অবস্থান ও স্মারকলিপির কমসূচী দেয়ার কথা বলেন।
এদিকে আব্দুর রব মিয়ার অভিযোগটি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা। তাঁর মতে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের নিরীক্ষা আপত্তির কারণে ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা বন্ধ রয়েছে। তাঁরা এই সেবা প্রদান সংক্রান্ত ব্যায়ে আপত্তি দিয়েছেন। তাছাড়া নিউইয়র্কের বাইরে এই সেবা চালু রয়েছে।কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ জানান, বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীর বসবাস এই নিউইয়র্ক সিটিতে। প্রতিনিয়তই প্রবাসীদের সংখ্যা বাড়ছে। নানা ব্যাস্ততা ও অভিজ্ঞতা না থাকায় কনাসাল জেনারেল অফিসে গিয়ে সেবা গ্রহণে তাঁদের বেগ পেতে হয় অনেক সময়। কনস্যুলেট সেবা প্রবাসীদের দৌরগোড়ায় নিয়ে যেতে ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা চালু করা হয়েছিলো। তখন সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ সোসাইটি। এতে ব্রংকস্ ও ব্রুকলিনের প্রবাসীরা উপকৃত হন এবং ব্যাপক সাড়া পড়ে। সেবা সমূহের মধ্যে ছিলো বাংলাদেশী পাসপোর্ট নবায়ন, নো ভিসা রিকোয়ার্ড সিল, এলাইড সার্টিফিকেট প্রদান, বাংলাদেশী পাসপোর্ট সংশোধন, বাংলাদেশী অন্যান্য সনদ পত্রের সত্যায়ন, পাওয়ার অব এটর্ণি সত্যায়ন ও দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের আবেদন পত্র গ্রহণ ইত্যাদি।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা এবং ড. মনিরুল ইসলামের সময়ে নিয়মিত এই সেবার আয়োজন করা হতো। এবং তাঁরাও স্ব-শরীরে সেবা কর্মসূচীতে অংশ নিতেন। ছুটির দিনে এমন সেবা নাগালে পেয়ে প্রবাসীরাও আনন্দিত ছিলো। কিন্তু বর্তমান কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা যোগদান করার পর এই সেবা বন্ধ হয়ে যায়। যদিও অদৃশ্য হাতের ইশারায় এইসেবা বন্ধ হয়েছে এমন সরব আলোচনা কমিউনিটিতে থাকলেও কোন পক্ষই এনিয়ে মুখ খুলতে চাননা।
এনিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দু রব মিয়া, সেক্রেটারি রুহুল আমিন সিদ্দীকি, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাবেক সেক্রেটারি জাহিদ মিন্টু বাংলাদেশ কনস্যুলেটে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার সাথে একাধিকাবার বৈঠক করে ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা চালু দাবি জানান। তখন বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে অবহিত করার কথাও হয়। কিন্তু, কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এ সেবা চালু হয়নি।
এদিকে গত ২৬ জানুয়ারি বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি ইউএসএ ইনক্ এর বার্ষিক সাধারণ সভায় ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা বন্ধ কেন প্রশ্ন তোলেন এবং চালুর দাবি তোলেন উপজেলা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। কেননা ব্রুকলিনে এই সেবাটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। সেই সভায়ও আব্দুর রব মিয়া কনসাল জেনারেল অফিসের নিস্পৃহাকে দায়ী করেন। রোববার বাংলাদেশ সোসাইটির সভায় আব্দুর রব মিয়া বলেন, প্রবাসীরা ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবায় উপকৃত হন। এজন্য বর্তমান কনসাল জেনারেলকে বহু চেষ্টা করেও বুঝাতে ব্যার্থ হয়েছি, উনাকে কনভিন্স করাতে পারিনি। আমি আবারো বৈঠক করবো আবারো চেষ্টা করবো এই সেবা যেনো চালু হয়। রব মিয়ার বক্তব্য শেষ হলে উপস্থিত সবাই সংহতি প্রকাশ করেন।
এনিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা বলেন, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের নিরীক্ষার সময় তাঁরা একই সিটিতে ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সেবা কর্মসূচীতে আপত্তি দিয়েছে। কারণ এতে খরচের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট। এখানে তাঁর ব্যাক্তিগত ইচ্ছা কিংবা মতামতের সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সোসাইটিসহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মতামত তিনি মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে অবহিত করবেন। অডিট আপত্তি প্রত্যাহার এবং পুনরায় অনুমোদন না পেলে এই সেবা চালু করা সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

0Shares