শীতে কাঁপুনি ধরে কেন?

শীতে কাঁপুনি ধরে । হাড়কাঁপানো শীতে দাঁত ঠক ঠক করে। কিন্তু কেন? শীতে শরীরে কী হয়? মোটা লোকদের কি শীত কম লাগে? পুরুষরা কি মহিলাদের চেয়ে কম শীতকাতুরে? সব মানুষের ‘ফ্রিজিং পয়েন্ট’ কি এক, অর্থাত্ সব মানুষের কি তাপমাত্রা কোনো একটা বিশেষ পর্যায়ে নামলে কাঁপুনি ধরে? বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রত্যেক মানুষের গায়ের চামড়ায় না কি গরম কি ঠাণ্ডা সংক্রান্ত সেন্সর বা ফিলার বসানো আছে। এই সেন্সরগুলো সারা শরীরে কিভাবে ছড়ানো, তার ওপরই নির্ভর করে কোন ব্যক্তির ঠিক কখন এবং কোথায় শীত লাগবে। কারও হয়তো কানে ফিলারের সংখ্যা বেশি, তাহলে তার কানেই বেশি ঠাণ্ডা লাগবে। অন্য কারও আবার মাথায় কিংবা হাতে সেই অনুযায়ী তার সেখানেই বেশি শীত করবে। সবার যে আবার একই সংখ্যক ফিলার বা অনুভূতি মাধ্যম থাকতে হবে, তার কোনো মানে নেই। আবার এমনও হতে পারে, কারোর হয়তো গরমের জন্য বেশি ফিলার আছে, কিন্তু শীতের জন্য কম। তাহলে তার বেশি গরম লাগবে, কিন্তু শীতে সে বিশেষ কাবু হবে না। এটাকে প্রকৃতির খেয়াল বলা যেতে পারে, যেমন সব মানুষের হাত-পায়ের সাইজ এক হয় না। তবে আমরা শীতের দেশের মানুষ হই আর গরমের দেশের মানুষ হই, আমাদের দেহের গড় তাপমাত্রা কিন্তু এক। ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। ওই তাপমাত্রা ৪২-এ উঠলে প্রাণের শঙ্কা দেখা দেয়, আবার ৩০-এর নিচে নামলেও তাই। দেহের তাপমাত্রা ৩০-এর নিচে নামলে হৃদযন্ত্র কিংবা মগজ ঠিকভাবে কাজ করে না, যার ফলে শেষমেষ মৃত্যুও ঘটতে পরে। কাজেই দেহের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে নামার সম্ভাবনা দেখলেই আমাদের নিজেদের শরীরই আমাদের সাবধান করে দেয় ওই কাঁপুনি ধরিয়ে! এমনকি কনকনে বাতাস বইলেই গায়ের চামড়া কুঁকড়ে যায়। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘গুজ পিম্পল্স’ বা ‘গুজ ফ্লেশ’, অর্থাত্ পালক ছাড়ানোর পর হাঁসের চামড়া যেরকম হয়। শীতে গায়ের চামড়া কুঁকড়ে যাওয়াটা কিন্তু মানুষের আদিম যুগের ব্যাপার, যখন আমাদের গায়ে লোম ছিল। মাথার চুলের মতোই গায়ের চামড়ার ওই অতি ক্ষুদ্র পেশিগুলো আজও শীত দেখলে অতীত যুগের কথা স্মরণ করে। সূত্র : ডিডব্লিউ/আমার দেশ