Saturday - May 18, 2024 12:46 PM

Recent News

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান : দেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিদেশে তুলে ধরার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান রাষ্ট্রদূত ইমরানের

এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন, ওয়াশিংটন ডিসি – বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদযাপন উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে শনিবার ৪ মে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একই সাথে দূতাবাস “Passport DC’s Embassy Tour 2024”-এর অংশ হিসেবে এক “ওপেন হাউস” অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গন থেকে ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ বের করা হয় এবং মিশন সংলগ্ন বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণের পর একই স্থানে এসে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্য এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা দেশীয় বাদ্যযন্ত্র, ঢোল, মুখোশ এবং বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জাম নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক শরিফা খান এবং বিপুল সংখ্যক বিদেশী অতিথি ও প্রবাসী বাংলাদেশি আনন্দঘন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি আতাউর রহমান এবং এর সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল একটি চমকপ্রদ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও তাদের সহধর্মিণীদের গাওয়া বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত গান—এসো, হে বৈশাখ, এসো এসো—পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়।
পরে বৃহত্তর ওয়াশিংটন মেট্রোতে অবস্থিত বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক দল “অপরাজেয় বাংলা”- এর শিল্পী এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সন্তানগণ চমৎকার দেশাত্ববোধক গান ও নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন।
রাষ্ট্রদূত ইমরান তার বক্তব্যে দেশবাসী, প্রবাসী বাংলাদেশি ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে এ উপলক্ষে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি বাংলা নববর্ষ উদযাপনের বর্ণাঢ্য ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, “পহেলা বৈশাখ” বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতির সবচেয়ে সর্বজনীন উৎসব।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন ২০১৬ সালে ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মানবতার একটি বিমূর্ত ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি দেশপ্রেম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জাতির সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিদেশের মাটিতে যথাযথভাবে তুলে ধরার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে সবাইকে একসাথে কাজ করার অনুরোধ জানান।
দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে বিভিন্ন দেশের প্রায় 5,000 নাগরিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। এ উপলক্ষে অতিথিদের জন্য ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার প্রদর্শন ও পরিবেশন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে জামদানি ও টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের বেশ কয়েকটি স্টল স্থাপন করা হয়। দর্শনার্থীরা অত্যন্ত আগ্রহের সাথে পোস্টার, লিফলেট এবং বই সংগ্রহ করেন যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, মহান ভাষা আন্দোলন এবং উন্নয়নের পাশাপাশি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং দর্শনীয় পর্যটন স্থানগুলোকে তুলে ধরে।

0Shares