Monday - January 27, 2025 2:37 PM

Recent News

চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা আবারও মামলার কবলে; ৯ ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠান বিবাদী

ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সংগঠন চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনক আবারও মামলার কবলে। দুইভাগে চলা চট্টগ্রাম সমিতির মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের পক্ষ থেকে ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট অব দ্য স্টেট অব নিউইয়র্ক কাউন্টি অব কিংসে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার ইনডেস্ক নম্বর হচ্ছে ৫৩৫১৪৬/২০২৪। মামলায় পেনসিলভানিয়ায় পুনরায় নির্বাচনের দাবি করা হয়, তাহের-আরিফ নেতৃত্বাধীন কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয় এবং ৯ জন কর্মকর্তাসহ দুটি প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়। আসামি পক্ষকে এক মাসের মধ্যে মামলার জবাব দিতে বলা হয়।


সভাপতি আবু তাহের এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্য সাংবাদিক সাহাব উদ্দীন সাগর জানিয়েছেন, তারা এখনো মামলার কোনো কাগজ পাননি। কাগজ পেলে তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। মাকসুদুল হক চৌধুরী জানান, আমাদের আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা মামলার কাগজ সার্ভ করেছেন।
এই মামলার বাদীরা হলেন-মাকসুদুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ মাসুদ এইচ সিরাজি, মোহাম্মদ সুমন উদ্দীন, তমাল কান্তি চৌধুরী, শিমুল বড়ুয়া, মোহাম্মদ জে. আবেদীন, সুশান্ত দত্ত, এডি এ ওয়াদুদ, মোহাম্মদ জাহিদুল আলম, মোহাম্মদ এ হাবিব এবং মোহাম্মদ এম চৌধুরী।
বিবাদীরা হলেন- ইলেকশন কমিশন অব চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনক, ইনটার্ম এক্সিজিকিউটিভ অব চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা, এক্সিকিউটিভ কমিটি অব চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা, মোহাম্মদ এন আনোয়ার, মনির আহমেদ, ইলেকশন সার্ভিস ইউনাইটেড করপোরেশন, সান্দরা টোভিন, মোহাম্মদ আবু তাহের, শেখ এম খালেদ, সাহাব উদ্দীন সাগর, মোহাম্মদ এ হান্নান চৌধুরী, মোহাম্মদ সেলিম ও রুহুল আমিন।
এই সংগঠনে দীর্ঘদিন থেকেই অচলাবস্থা চলছে। কয়েক বছর আগে মামলা মোকদ্দমায় জর্জরিত এ সংগঠনকে উদ্ধারে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হয়। অবেশেষে সেই কমিটি প্রচেষ্টায় ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন কমিশন করে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। সেই নির্বাচন দুটো প্যানেল অংশগ্রহণ করে। একটি প্যানেলে ছিলের আবু তাহের এবং আরিফ। অন্য প্যানেলের নেতৃত্বে ছিলেন মাকুসুদুল হক চৌধুরী এবং মাসুদ সিরাজী। অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশে সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ২০ অক্টোবর।
নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া এবং কানেকটিকাটের ৪ কেন্দ্রে দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ করা হয়। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন ছিল সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সবাই ছিলেন সন্তুষ্ট। কিন্তু গোল বেধেছে ছয়টি চ্যালেঞ্জ ভোট। যে কারণে ভোট গণণা শেষেও নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে পারেননি। তবে তারা অন্তর্বর্তী ফলাফল ঘোষণা করেছেন। আন্তর্বর্তী ফলাফল ঘোষণার পূর্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ এম খালেক বলেন, আমরা নির্বাচনের কোনো ফলাফল এই মুহূর্তে ঘোষণা করতে পারবো না। তবে এ পর্যন্ত কারা এগিয়ে আছেন সেই ঘোষণা আমরা দিতে পারবো। তিনি বলেন, ইউনাইটেড ভোটিং সার্ভিস (মেশিন কোম্পানী) আমাদের জানিয়েছেন, ৬টি চ্যালেঞ্জ ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়া নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা যাবে না। এই সময় দুই প্যানেলের প্রার্থী, সমর্থক এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহাব উদ্দিন সাগর, মোহাম্মদ এ হান্নান চৌধুরী, মোহাম্মদ সেলিম এবং রুহুল আমিন। অন্তর্বর্তী ফলাফল ঘোষণায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সহযোগিতা করেন কমিশনের সদস্য শাহাব উদ্দিন সাগর। তিনিই জানিয়ে দেন কোন প্যানেলের কোন প্রার্থী কত ভোট পেয়েছেন এবং এগিয়ে রয়েছেন। সেই ফলাফলে সভাপতি পদে মাকুসুদল হক চৌধুরী মাত্র দুই ভোটে এগিয়ে ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে আরিফুল ইসলাম ২৫ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। মাকসুদ- সিরাজি প্যানেল ১৩ পদে এবং তাহের- আরিফ প্যানেল ৬ পদে এগিয়ে ছিলেন। কয়েকদিন অপেক্ষার পর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির দেওয়া ফলাফলে সভাপতি হিসাবে আবু তাহেরকে ঘোষণা করা হয়। আরো কয়েকটি পদে ফলাফলের পরিবর্তন হয়। শেষ পর্যন্ত মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করা হয়। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন গত ৩ নভেম্বর তাহের-আরিফ প্যানেলের প্রার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। এ নিয়ে উত্তেজনাও ছিলো। ছিলো পুলিশি উপস্থিতি। তাদেরকে চট্টগ্রাম সমিতির ভবনের বাইরে শপথ পাঠ করানো হয়। অন্যদিকে মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের প্রার্থীরা ৫ নভেম্বর শপথ বাক্য পাঠ করেন। দুইভাগে চলছিলো চট্টগ্রাম সমিতি। শেষ পর্যন্ত মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হল।

 

0Shares