অবসর জীবনেও ভ্যাটিকানে থাকবেন বেনেডিক্ট

বৃহস্পতিবার ছিল পোপ হিসেবে ষোড়শ বেনেডিক্ট-এর কার্যকালের শেষদিন। একজন পদত্যাগী পোপের জীবনযাত্রা কী হতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া কঠিন, কারণ গত কয়েকশ’ বছরে এমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই। প্রাক্তন পোপ আর নিজেকে পোপ বলতে পারেন না। আবার পোপ হওয়ার আগে তার যে নাম ছিল, সেই ইয়োসেফ রািসঙারও আর ফিরে আসতে পারে না। অতএব ষোড়শ বেনেডিক্ট নামটি থেকেই যাচ্ছে। আগে ‘পোপ’ শব্দটা বাদ পড়বে। তার বদলে আসবে ‘পোপ এমেরিটাস’ উপাধি, যেমনটা অবসরপ্রাপ্ত ক্যাথলিক কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে বলা হয়। তিনি নিজে অবশ্য বলেছেন, একবার পোপ হলে আর আগের ব্যক্তি জীবনে ফেরার কোনো পথ খোলা থাকে না। অতএব বাকি জীবনটা বাভারিয়ায় নিজের গ্রামে ভাইয়ের সঙ্গে কাটানোর বিলাসিতা তার থাকছে না। কারণ সে ক্ষেত্রে তাকে ঘিরে এক তীর্থক্ষেত্র গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে, যা তিনি মোটেই চান না। তাই ভ্যাটিকানে থেকেই লোকচক্ষুর অন্তরালে তিনি প্রার্থনা করে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তবে অনেকেরই অস্বস্তি কাটছে না। পোপ আবার নিজের পুরনো নামে ফিরে গেলে বিতর্ক কম হতো। প্রায় ৬০০ বছর আগে পোপ পঞ্চম সোলেস্টিন ঠিক সেটাই করেছিলেন। কিন্তু নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার পরও কাছাকাছি এক ‘পোপ এমেরিটাস’ থাকলে একের বদলে ঈশ্বরের দুই শীর্ষ প্রতিনিধির উপস্থিতি মেনে নিতে পারছেন না অনেকে। তবে ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। মধ্যযুগে খ্রিস্ট ধর্মের বিভাজনের সময় একই সঙ্গে তিন জন পোপও দেখা গেছে, যাদের মধ্যে একজন আসল ও বাকি দু’জন প্রতিবাদী প্রার্থী হিসেবে নিজেদের তলে ধরেছিলেন। মনে রাখতে হবে, পোপ শুধু খ্রিস্টান ধর্মের শীর্ষনেতা নয়, তিনি পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্রেরও প্রধান। তার ক্ষমতার কোনো সীমা নেই। ফলে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট নিজেই নিজের প্রস্থানের প্রক্রিয়া স্থির করতে পেরেছেন। তবে কিছু নিয়ম তাকেও মানতে হবে। বাকি জীবনে তিনি সাদা পোশাক পরতে পারবেন বটে, তবে লাল জুতো পরার অধিকার তার আর থাকবে না। একমাত্র ক্ষমতাসীন পোপের জন্যই এই সম্মান নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে। ফলে ভবিষ্যতে ভ্যাটিকানে দুই বৃদ্ধকে দেখলে জুতার দিকে তাকিয়ে বুঝতে হবে, কে ক্ষমতাসীন পোপ। ক্ষমতার প্রতীক সোনার আংটিও খুলে রাখবেন বেনেডিক্ট। লাল জুতার বদলে পছন্দের খয়রি জুতা পরতে চান তিনি, যা তিনি সম্প্রতি মেক্সিকোয় উপহার হিসেবে পেয়েছেন। ক্ষমতায় থেকেও বেনেডিক্ট কিন্তু কোনো বেতন পাননি। ফলে অবসর ভাতারও প্রশ্ন উঠতে পারে না। নেই স্বাস্থ্যবিমাও। গির্জাই তার থাকা-খাওয়া, চিকিত্সার ব্যয়ভার বহন করে আসছে।আমার দেশ