অভিবাসন যুক্তরাজ্যকে কতটা বদলে দিয়েছে?

যুক্তরাজ্যে গত কয়েক দশকে লাখো মানুষ অভিবাসী হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে অভিবাসনের চিত্র বদলে গেছে। অভিবাসীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলেমিশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যদিও ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গ ও এশীয়দের অভিযোগ, পূর্ব ইউরোপের অভিবাসীরা সহজে অঙ্গীভূত হতে চান না।
কানাডার পিটারবরো শহরে গত এক দশকে অন্তত ২৪ হাজার অভিবাসী আস্তানা গেড়েছেন।
সম্প্রতি আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, পোল্যান্ড থেকে গত ১০ বছরে পিটারবরো শহরে সবচেয়ে বেশি অভিবাসী আশ্রয় গ্রহণ করেন। এ সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজারের বেশি। একই সময়ের মধ্যে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্তত পাঁচ হাজার অভিবাসী শহরটিতে পাড়ি জমান। এ শহরের মোট বাসিন্দার প্রতি পাঁচজনের একজনের জন্ম যুক্তরাজ্যের বাইরের কোনো দেশে।
গত দশকে পূর্ব ইউরোপের ১০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা যুক্তরাজ্যে অভিবাসন গ্রহণ করেন। এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিবিদদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাই দেশটির প্রধান তিনটি দলের শীর্ষ নেতারা কয়েক সপ্তাহ ধরে বিষয়টি নিয়ে জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।
ব্রিটিশ সোশ্যাল অ্যাটিটিউডের জরিপ অনুযায়ী, অভিবাসীরা নানা বৈষম্যের শিকার হন। তাঁদের অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। প্রথম বা দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী যাঁরা হতদরিদ্র, পড়াশোনা কম, তাঁরা সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।
পিটারবরো শহরের ইয়ান নামের এক বাসিন্দা জুতো মেরামতের একটি দোকানের মালিক। তিনি বলেন, ‘মনে হয় না, আমার ছেলে এ শহরে ভালো পড়াশোনা করার সুযোগ পাবে। তাই বাড়ি বিক্রির চেষ্টা করছি।’ শহরের একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি জানিয়েছে, তাদের কোনো শিক্ষার্থীর মাতৃভাষা ইংরেজি নয়। শুধু তা-ই নয়, শহরের ১০ শতাংশ বাসিন্দা বাড়িতে ইংরেজিতে কথা বলে না।
অভিবাসীরা ইটভাটাসহ কঠোর পরিশ্রমের কাজ করতে বাধ্য হন। পরিচ্ছনতার কাজ সাধারণত স্থানীয় বাসিন্দারা করেন না। অভিবাসীরাই এসব কাজ করে থাকেন। এসব কারণে অভিবাসীদের এক ধরনের বাঁকা চোখে দেখা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে অভিবাসন নীতি কঠোর করার পক্ষে। আবার অনেকে বলছেন, কে কোথা থেকে অভিবাসন গ্রহণ করছেন, এটা বড় নয়, বরং তিনি এ সমাজেরই একজন হতে পেরেছেন কি না, তা-ই দেখার বিষয়। রাজনীতিবিদদের কেউ কেউ বলছেন, অভিবাসীদের হাড়ভাঙা খাটুনির কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিবিসি।প্রথম আলো