এক ট্রাকেই সারা পৃথিবীর তথ্য!

প্রযুক্তিনির্ভর (ডিজিটাল) তথ্য সংরক্ষণে স্থান বা ধারণক্ষমতার অভাব দূর করতে এবং খরচ কমাতে এবার নতুন পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হতে যাচ্ছে। এতে জীবদেহের তথ্যভান্ডারের মূল উপাদান ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিডের (ডিএনএ) আদলে তথ্য সংরক্ষণ সম্ভব হবে। ফলে বিপুল পরিমাণ তথ্য হাজার হাজার বছর ধরে সুরক্ষিত থাকবে চৌম্বক আধার বা কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভ ছাড়াই।
যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ইউরোপিয়ান বায়োইনফরমেটিকস ইনস্টিটিউটের (ইবিআই) গবেষক নিক গোল্ডম্যান ও ইউয়ান বার্নি তথ্য সংরক্ষণের এই নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে সাফল্য অর্জনের দাবি করেছেন। নেচার সাময়িকীতে তাঁদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, তথ্যের কৃত্রিম সংরক্ষণাগার (ডিএনএ টেস্টটিউব) তৈরি করে তাতে তথ্য সংরক্ষণের উপায় উদ্ভাবন করেছেন গোল্ডম্যান ও বার্নি। ডিএনএ টেস্টটিউবে প্রতি গ্রাম এককে ২ দশমিক ২ পেটাবাইট বা ১০ লাখ গিগাবাইট তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে। প্রচলিত পন্থায় সাধারণ তথ্যকে বাইনারিতে রূপান্তর করে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হলেও নতুন পদ্ধতিতে আরও কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে সাধারণ তথ্য দ্বিমিক সংখ্যা (বাইনারি) আকারে পরিবর্তন করে তা আবার ত্রিমিক সংখ্যা (টারনারি) আকারে রূপান্তর করা হয়। এরপর টারনারি তথ্যকে ডিএনএর কোডে রূপান্তর করা হয়। ডিএনএর কোড হলো: এডেনোসিন (এ), থাইমিন (টি), সাইটোসিন (সি) ও গুয়ানিন (জি)। তবে এই রূপান্তরিত তথ্য পুনরুদ্ধারে গবেষকদের দুই সপ্তাহ সময় লেগে যায়। এই গবেষণায় ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার। তবে ব্যয় ও সময়—দুটোই কমিয়ে আনা সম্ভব বলে গবেষকেরা আশাবাদী। আর তাহলে গোটা পৃথিবীর যাবতীয় তথ্য একটি বড় লরি বা ট্রাকেই এঁটে যাবে। এই পদ্ধতিতে তথ্য সংরক্ষণে পুনরাবৃত্তি বা বিলুপ্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা থাকবে। দি ইকোনমিস্ট।প্রথম আলো