Saturday - March 15, 2025 11:39 AM

Recent News

ডায়াবেটিস চিকির‌্যাসায় নতুন মোড়

ডা. তানজিনা হোসেন : মাত্র কয়েক দশক আগেও ধারণা ছিল, খাদ্য গ্রহণের পর রক্তে গ্লুকোজের নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই বুঝি ইনসুলিনের দখলে। বিশ শতকের গোড়ার দিকে একে একে আবিষ্কৃত হতে থাকে মানুষের অন্ত্র থেকে নিঃসৃত নানা ধরনের হরমোন, যারা বিপাক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সিক্রেটিন, জিআইপি, জিএলপি, সোমাটোস্ট্যাটিন ইত্যাদি নতুন সব রাসায়নিকের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের বলতে বাধ্য করে যে মানুষের নাড়িভুঁড়ি হলো দেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি। এসব হরমোনকে একত্রে নাম দেওয়া হয় ইনক্রিটিন। গ্লুকাগন লাইক পেপটাইড বা জিএলপি একটি ইনক্রিটিন, যা নিঃসৃত হয় ক্ষুদ্রান্ত্রের এল কোষ, অগ্ন্যাশয়ের আলফা কোষ এবং মস্তিষ্কের কিছু নিউরন থেকে। এটি খাদ্য গ্রহণের পর স্বাভাবিক ইনসুলিন নিঃসরণকে শুধু নিয়ন্ত্রণ করে তা নয়, পাকস্থলীতে খাবারটা কতক্ষণ থাকবে, মানুষ কতটুকু খাবে এমনকি তৃপ্তি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে। জিএলপির আবিষ্কার ডায়াবেটিস চিকির‌্যাসা গবেষণাকে ইনসুলিনের দিক থেকে সম্পূর্ণ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়। মেক্সিকোর বিচ্ছিরি বিষাক্ত সরীসৃপ গিলা মনস্টারের লালা থেকে তৈরি করা হয় প্রথম ব্যবহারযোগ্য জিএলপি হরমোন এক্সিনিটাইড। বছর কয়েক আগে বিজ্ঞানীরা বলেন, কৃত্রিম জিএলপি এগনিস্ট তৈরি সম্ভব হয়েছে। ২০১০ সালে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুমোদন দেয় এই জিএলপি এগনিস্ট লিরাগ্লুুটাইড বাজারজাতকরণের। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে প্রধান সমস্যা ওজনাধিক্য, ইনসুলিন অকার্যকারিতা ও বেটা-কোষের ক্রমাগত ক্ষয়। এর আগে আর কোনো ওষুধ এর সবগুলো একত্রে আক্রমণ করতে পারেনি। মেটফরমিন ছাড়া আর সব ওষুধ, এমনকি ইনসুলিনও ওজন বাড়াতে পারে। খাবার পর স্বাভাবিক ইনসুলিন নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি লিরাগ্লুটাইড মানুষের তৃপ্তি ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। গবেষণা বলছে, এটি বিটা কোষের ক্রমাগত ক্ষয়কেও রোধ করতে পারে।প্রথম আলো

0Shares

COMMENTS