Thursday - November 14, 2024 2:05 AM

Recent News

নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আব্দুর রকিব মন্টুর সংবাদ সম্মেলন : “রাজনগরে অন্যের জমি দখল করে টর্চার সেল/আয়নাঘর” ইত্যাদি শিরোনামে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত ও প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ, ন্যায় বিচার কামনা (ভিডিও সহ)

ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম, নিউইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশের সাবেক সহকারী এটর্নী জেনারেল, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সদস্য এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু তাকে জড়িয়ে “রাজনগরে অন্যের জমি দখল করে টর্চার সেল/আয়নাঘর” ইত্যাদি শিরোনামে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত ও প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে গত ৯ নভেম্বর শনিবার আয়োজিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এসব খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মানহানিকর। একটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত কুচকক্রী মহল হত্যা মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টার পাশাপাশি তাদের বিপুল পরিমান সম্পত্তি গ্রাস করার হীন উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার আর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন। তিনি এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ন্যায় বিচার কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু। এসময় উপস্থিত ছিলেন তার ভাই সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবীদ আব্দুর ররিম বাদশা ও আব্দুর রউফ পাশা, বোন ডা. সাহানারা আলী রেনু, জাহানারা আহমদ লক্ষী ও মনোয়ারা বেগম মনি। তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিস্তারিত তুলে ধরে এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু জানান, তাদের সম্পত্তির কেয়ার টেকার মোঃ আব্দুল মালিকের হত্যাকারী নূরুল ইসলাম কলা মিয়া ও তার সঙ্গীরা (হত্যা মামলার আসামী) হত্যা মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের সম্পত্তি আত্মসাত করার হীন চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন।
এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু লিখিত বক্তব্যে বলেন, মৌলবীবাজার জেলাধীন রাজনগর উপজেলায় নিজগাঁও (পানিশাইল) গ্রামে আমার পিতা মৃত আলহাজ্ব বশির আলী, মাতা মোসাম্মৎ রাবেয়া খানম ও আমার খালা মোসাম্মৎ রহিমা খানম দুইটি পৃথক দলিলমূলে (যার নাম্বার ৩৪৮৭/১৯৭৪ ও ৩৪৮৮/১৯৭৩) বসত ভিটা ও ফসলী জমি সহ প্রায় সাড়ে তিন একর জায়গা ভোগ দখল করে ক্রমান্বয়ে আরও প্রায় নয় একর জমি ক্রয় করেন। আমার পিতা সিলেট জেলাধীন ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানায় কর্মরত থাকায় উপরে বর্ণিত বাড়ি ও জমি দেখভাল করার জন্য নূরুল ইসলাম কলা মিয়াকে কেয়ারটেকার হিসাবে দায়িত্ব দেন। আমরা ভাই-বোন সবাই অধ্যয়নরত ও প্রবাসে থাকার কারণে আমাদের পিতা কেয়ার টেকারের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। আমার পিতার বিশ্বাস ও সরলতার সুযোগ নিয়ে কেয়ার টেকার নূরুল ইসলাম কলা মিয়া আমার পিতার অগোচরে নতুন জরিপকালে (১৯৯৫/১৯৯৬) সালে বাড়ীসহ জমির প্রতিটি দাগে দুই আনা অংশ তার নিজের নামে রেকর্ডভূক্ত করেন। আমার পিতা ২০০৬ সালে মার্চ মাসে মৃত্যুবরণ করার পর আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমি দেশে যাই এবং আমাদের সকল সহায় সম্পত্তি দেখাশুনার দায়িত্ব গ্রহন করি। তখন কেয়ারটেকার নূরল ইসলাম কলা মিয়ার এ হেন জালিয়াতি আমার দৃষ্টিগোচর হয়।
এমতাবস্থায় আমি আমার মা, ভাই-বোনদের সাথে আলোচনাক্রমে আমাদের আত্মীয় মোঃ আব্দল মালিককে কেয়ার টেকারের দায়িত্ব অর্পন করি। মা সহ আমরা সকল ভাই-বোন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। আমাদের সম্পত্তির জাল-জালিয়াতির এই বিষয়টি সামাজিকভাবে নিস্পত্তির জন্য আমাদের দিক থেকে কয়েক দফা আলোচনা করি। কিন্তু নূরুল ইসলাম কলা মিয়া কেবলই কালক্ষেপন করতে থাকেন। সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে আমরা সহকারী জজ আদালত মৌলভী বাজার ও সহকারী জজ আদালত রাজনগর, মৌলভীবাজার এ দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করি (রাজনগর স্বত্ব মোকদ্দমা নাম্বার ১৮৯/২০১৪ ও রাজনগর মোকদ্দমা নাম্বার ১৫৮/২০২৩)। উভয় মামলার বিবাদী নূরুল ইসলাম কলা মিয়া এবং বাদী আমাদের মা মোসাম্মৎ রাবেয়া খানমসহ আমরা ভাই-বোনগণ।
তখন থেকেই নূরুল ইসলাম কলা মিয়া আমাদের নতুন কেয়ার টেকার মোঃ আব্দুল মালিকের প্রতি নানান ধরনের হুমকি-ধামকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে এবং শারীরিকভাবে কয়েকবার মারাত্বক আঘাত করেন। এই পরিস্থিতিতে মোঃ আব্দল মালিক বাদী হয়ে নূরুল ইসলাম কলা মিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমে জিডি এবং পরবর্তীতে রাজনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
আব্দুর রকিব মন্টু লিখিত বক্তব্যে বলেন, রাজনগর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত সাপেক্ষে নূরুল ইসলাম কলা মিয়া ও তার ছেলে আমিন ও শামিমকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। প্রায় সাড়ে চার মাস পর জেল হাজত থেকে বের হয়ে তারা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন্ পরবর্তিতে ২০২১ সালের ১৭ই নভেম্বর নূরুল ইসলাম কলা মিয়া তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে দুই বছরের শিশু সন্তানের জনক মোঃ আব্দুল মালিককে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। এই মর্মান্তিক হত্যা কান্ডের ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ঘটনার পর আমি নিজে বাদী হয়ে রাজনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি (রাজনগর থানার মামলা নং ৯/১৯২, জি আর নং ১৯২/২১)। রাজনগর থানার পুলিশ প্রথমে তিনজনকে গ্রেফতার করে এবং তাদের মোবাইল ফোন ট্যাকিং করে পরবর্তীতে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য যে, শেষের তিনজন পেশাদার খুনি এবং তাদেরকে রাজশাহী থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তারা তিনজনই রাজশাহীর বাসিন্দা। তারা সবাই দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর পরে জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মোঃ আব্দুল মালিকের স্ত্রী সাবরিনা আক্তার সাফিয়াসহ সাক্ষীদেরকে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এই বিষয়ে মোঃ আব্দুল মালিকের স্ত্রী রাজনগর থানায় ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখ নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেন (জিডি নং ২১৩)।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্প্রতি মোঃ আব্দুল মালিকের হত্যাকারীরা এই মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় এবং আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি গ্রাস করার হীন উদ্দেশ্যে নানান রকমের বানোয়াট অপপ্রচারের মাধ্যমে আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষে নানাবিধ অপকৌশল আর চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
আব্দুর রকিব মন্টু বলেন, অ্যামোনিয়া গ্যাসúূর্ণ সিলিন্ডার মজুদ রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিস্ফোরক অ্যাক্ট ১৮৮৪ ও তদাধীন প্রণীত গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ১৯৯১ এর বিধানাবলী এবং শর্তাবলী অনুযায়ী আমাদের নির্মিত সেমিপাকা কয়েকটি মজুদাগার এই ভূমিতে রয়েছে, যা ইদানিং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তথা কথিত আয়নাঘর/টর্চার সেল বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
তিনি প্রবাস থেকে মোঃ আব্দুল মালিকের খুনীদের দ্রুত বিচার, হত্যাকারীদের অপতৎপরতা বন্ধ, গ্যাস সিলিন্ডার মজুদারগার, গাছ, বসতগৃহ সহ তাদের মূল্যবান সম্পত্তি সুরক্ষার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

0Shares