নিউইয়র্কে ৭ মার্চ সহ বাংলাদেশের আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের প্রতিবাদে সভা এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী মতিয়া চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মহফিল (ভিডিও সহ)
ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম : বাংলাদেশে ৭ই মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের প্রতিবাদে এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী মতিয়া চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে ও কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসে প্রতিবাদ সভা ও দোয়া মহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিউইয়র্কে ব্রুকলিনের লাবন্য পার্টি সেন্টারে গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় শেখ কামাল স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত সভায় সভাপতিত্বে করেন সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাসুদুল হাসান, এমডি। শেখ কামাল স্মৃতি পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, শেখ কামাল স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম বাদশা, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাহিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সরাফ সরকার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহ আহমেদ, আজিজুর রহমান সাবু, মহি উদ্দিন, ইমদাদ ভূইয়া, শাহ মিজান, আব্দুল কাদির, গণজাগরণ মঞ্চ নেতা আল আমিন, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, যুবলীগ নেতা হেলিম উদ্দীন প্রমুখ। এসময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও আওয়ামী লীগ নেত্রী মতিয়া চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন আওয়ামীলীগ নেতা বুরহান উদ্দিন কপিল। এসময় শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এদিকে, বাংলাদেশে ৭ই মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের প্রতিবাদে গত ২০ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় আরেকটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শেখ কামাল স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র’র উদ্যোগে এবং নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শেখ কামাল স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাসুদুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী ও হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম বাদশা, চন্দন দত্ত, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মিসবাহ আহমেদ, ফরিদ আলম, হিন্দাল কাদির বাপ্পা, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান মিয়া, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী, শেখ হাসিনা মঞ্চের সভাপতি জালাল উদ্দিন জলীল ও সাধারণ সম্পাদক কায়কোবাদ খান, মাঈনুদ্দীন প্রমুখ। এসময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও আওয়ামী লীগ নেত্রী মতিয়া চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বাংলাদেশে ৭ই মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সহ আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ জানান। বক্তারা একাত্তরকে বাদ দিয়ে আমরা এগোতে পারব না উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতাসংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিববুর রহমানের ঐতিহাসিক ভূমিকা ও নেতৃত্বকে অস্বীকার করে তারা ঐতিহাসিক ৭ মার্চ সহ আটটি জাতীয় দিবসকে বাতিল করে দিল, অথচ ইউনেসকো ঐতিহাসিক ৭ মার্চ কে বিশ্ব হ্যারিটেজের অংশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। অন্তর্ববর্তী সরকার সেটি বাতিল করে দিল কোন যুক্তিতে?
তারা বললে, আওয়ামী লীগ সরকার করেছে বলে সবকিছু বাদ দেওয়া যায় না। আওয়ামী লীগ সরকার তো আমাদের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতও ঠিক করেছে। তাই বলে কি জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকাও বাদ দেবে?
তারা বলেন, সকল দ্বিধা-বিভক্তি ভুলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দুর্দিনে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতি ডা. মাসুদুল হাসান ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শেখ কামালের অবিস্মরণীয় অবদানের কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি আটটি জাতীয় দিবস বাদ দিয়ে দেয়। দিবসগুলো হলো ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।