ফাস্টফুডে শিশুদের হাঁপানির শঙ্কা – গবেষণার তথ্য

ফাস্ট ফুড শিশুর হাঁপানি হওয়ার শঙ্কা বাড়ায় প্রায় ৪০ শতাংশ। ৩১টি দেশের শিশুদের ওপর গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই তথ্য। আর এই শঙ্কা থেকে বাঁচতে হলে শিশুদের দিতে হবে স্বাস্থ্যকর খাদ্য। ফাস্ট ফুড খেলে শিশুদের হাঁপানি, একজিমা বা চর্মরোগ এবং নাকের সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ‘থোর্যাক্স’ জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য। এতে দেখা যাচ্ছে, যেসব অল্প বয়সী শিশু-কিশোর সপ্তাহে তিন বা তার বেশি বার ফাস্ট ফুড খায়, তাদের হাঁপানি হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি। ছয় থেকে সাত বছর বয়সীদের মধ্যে এই শঙ্কা ২৭ শতাংশ। গবেষকরা বলছেন, অল্প বয়সীদের মধ্যে যারা ফলমূল এবং শাকসবজি বেশি খায়, তাদের হাঁপানি বা অ্যালার্জির ঝুঁকি অনেক কম থাকে। সর্বশেষ গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত লেখক অধ্যাপক লুইস গার্সিয়া-মার্কোস এর মতে, এক্ষেত্রে ফাস্ট ফুড খাওয়া ছাড়াও কিছু ফ্যাক্টর রয়েছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সারাবিশ্বেই এমনটা ঘটছে। এসব রোগের ঝুঁকি বাড়ার পেছনে পৃথিবীর পশ্চিমাকরণ বা ম্যাকডোনাল্ডাইজেশনও দায়ী। ছোটবেলায় হাঁপানি এবং অ্যালার্জি বিষয়ক গবেষণা প্রকল্প আইসাক এর জন্য ১৯৯৪ সাল থেকেই বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন। এখন অবধি ১০০টি দেশের বিশ লাখের মতো শিশুকে এই গবেষণা প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষা করা হয়েছে। মাক্স রুবনার ইনস্টিটিউটের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ বের্নহার্ড ওয়াটসেল এই বিষয়ে বলেন, যেসব শিশু ফাস্ট ফুডে অভ্যস্ত তারা সাধারণত বাড়িতেও অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খায়। তাদের মধ্যে মাংস এবং শর্করা গ্রহণের প্রবণতা বেশি। গবেষকদের প্রকাশ করা এসব উদ্বেগজনক তথ্যের প্রভাবও অবশ্য জনজীবনে পড়তে শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে ক্যালিফোর্নিয়ার কথা। সেখানকার রাজ্য কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে রেস্তোরাঁয় ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার বিক্রি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁয় চিনিযুক্ত বড় পানীয় বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে গত সেপ্টেম্বর থেকে। ওয়াটসেল মনে করেন, জার্মানিতে এরকম উদ্যোগ খুব সহজে হয়তো দেখা যাবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইউরোপের খাদ্য পরিবেশ প্রমিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। তার চেয়ে বরং আপাত সমাধান হচ্ছে, শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে জ্ঞান দেয়া। যাতে করে তারা ফাস্ট ফুডে আগ্রহী না হয়। সূত্র : ডিডব্লিউ/আমার দেশ