মা-বাবার সান্নিধ্যেই পরিপূর্ণ বিকাশ

শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ আর যথার্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য মা-বাবাই সান্নিধ্য যে সবসময়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ একথা হয়তো কমবেশি সকলেরই জানা। কিন্তু আধুনিক সময়ের সাথে পাল¬া দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মক্ষেত্রে মা-বাবার ব্যস্ততার পাল¬া যেমন ভারী হচ্ছে ঠিক তেমনি শিশুরাও বঞ্চিত হচ্ছে তার পরম আরাধ্য পারিবারিক সান্নিধ্য থেকে। এক্ষেত্রে জীবিকা নির্বাহের দোহাই দিয়ে অনেকেই হয়তো বিষয়টিকে সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চান না কিংবা কর্মজীবনের বাইরে অবশিষ্ট সময়টুকুতেও শিশুকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার প্রতি সতর্ক থাকেন না। যদিও সমাজব্যবস্থার যতই পরিবর্তন হোক না কেন, শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে এখনও যে মা-বাবার ভূমিকাই অগ্রগণ্য সেটি নতুন করে আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন কানাডার ক্যালগেরি ইউনিভার্সিটির হচকিস ব্রেইন ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ও বৈজ্ঞানিক বিশে¬ষণের মাধ্যমে এই গবেষকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, যেসব শিশু তাদের বেড়ে ওঠার সময়টিতে মা এবং বাবা উভয়েরই সমান সান্নিধ্য পায় তাদের মস্তিস্কে কোষের সংখ্যা মা-বাবার কম সান্নিধ্য পাওয়া শিশুদের চাইতে বেশি হয়। এই গবেষণার অংশ হিসেবে মানব শিশুদের পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি গবেষকরা শুধু মায়ের কাছে বড় হওয়া, দুটি মেয়ে ইঁদুরের কাছে বড় হওয়া এবং মা-বাবা উভয়ের সান্নিধ্যে বড় হওয়া কিছু ইঁদুরের বাচ্চাকে আলাদা তিনটি দলে ভাগ করে পরীক্ষা চালান। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে মূলত এদের বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এতে দেখা যায় যে, পরীক্ষাগারে যেসব ইঁদুর তাদের বেড়ে ওঠার সময়টিতে মা কিংবা দুটি মেয়ে ইঁদুরের সান্নিধ্য পেয়েছে তারা মা-বাবা উভয়ের সান্নিধ্যে বড় হওয়া ইঁদুরগুলোর তুলনায় কম বুদ্ধিমান। এছাড়া মা-বাবার সাথে থাকা ইঁদুরের মস্তিস্কের কোষের সংখ্যাও অন্য ইঁদুরের চাইতে তুলনামূলক বেশি বলেও প্রমাণ পান হচকিস ব্রেইন ইনস্টিটিউটের এই গবেষকরা। আর এই গবেষণা থেকেই একইভাবে তারা সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে মূলত মা-বাবার সান্নিধ্যে থাকা শিশুরা অন্য শিশুদের চাইতে কিছুটা বেশি মনোযোগ পায় বলেই এসব শিশুর মস্তিস্কের গঠন ভালো হবার সম্ভাবনা বাড়ে। ইত্তেফাক