Monday - March 17, 2025 1:13 PM

Recent News

যানজট এড়াতে অফিসে যান হেলিকপ্টারে

Sample Image
নাশরাত চৌধুরী: হেলিকপ্টারে চড়ে অফিস করছেন স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এইচ চৌধুরী, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, স্কয়ার এয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালকগণ।
 ঢাকায় যানজট এড়িয়ে সময় বাঁচাতে এবং ঢাকার বাইরে নিরাপদ ভ্রমণের জন্যেই মূলত হেলিকপ্টার ব্যবহার করেন তারা। না ভাড়া করা কোন হেলিকপ্টার নয়। নিজেদের কেনা হেলিকপ্টারেই অফিস করছেন তারা। স্কয়ার গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্কয়ার এয়ার লিমিটেড-এর মাধ্যমে তারা আমেরিকার খ্যাতনামা হেলিকপ্টার কোম্পানি বেল-এর কাছ থেকে কিনেছেন বেল-৪০৭ সিরিজের একটি হেলিকপ্টার। এটি অত্যাধুনিক। এর মূল্য প্রায় বিশ কোটি টাকা। পাঁচ আসন বিশিষ্ট। রয়েছে সর্বাধুনিক সব প্রযুক্তি। হেলিকপ্টারে ভ্রমণকালেও তারা অফিসের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজ করতে পারেন। ক্লান্তি দূর করার ব্যবস্থাও আছে। ঢাকা থেকে ভালুকা, কালিয়াকৈর, পাবনার অফিসেও যান হেলিকপ্টারে। ব্যবসায়িক কাজে অন্য কোন জেলায় যেতে হলেও হেলিকপ্টার ব্যবহার করেন। কখনও চেয়ারম্যান, এমডি, দুই পরিচালক আলাদা আলাদা অফিসে বসেন। তখন তাদের নির্ধারিত অফিসে পৌঁছে দেন সুদক্ষ পাইলট শফিকুর রহমান। আবার নিয়েও আসেন। সাধারণত হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে এ হেলিকপ্টার ওঠানামা করে। কোন কোন সময় স্কয়ার হাসপাতালের অফিস থেকেও তারা হেলিকপ্টারে চড়েন। এসব তথ্য স্কয়ার এয়ার লিমিটেডের সূত্র থেকে পাওয়া। হেলিকপ্টারে চড়েন বলে তাদের অনেক সময় বেঁচে যায়। কোন কাজ থেমে থাকে না। সময়ের কাজ সময়েই করতে পারেন। বৈঠকের নির্ধারিত সময়েই তারা পৌঁছে যান। যানজটে নাকাল হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজের সময় নষ্ট করতে চান না। এজন্য সব সময় গাড়ি ব্যবহার করেন না। হেলিকপ্টার ওঠানামার জন্য স্কয়ার হাসপাতালে রয়েছে হেলিপ্যাড। সূত্র জানায়, হেলিকপ্টারটি বেশি ব্যবহার করেন স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেক উপদেষ্টা তপন চৌধুরী। তাদের পরিকল্পনা রয়েছে আগামী দিনে বাড়ি থেকেই হেলিকপ্টারে ওঠানামার ব্যবস্থা করার। এজন্য স্যামসন এইচ চৌধুরীর বারিধারার বাড়িতে নির্মাণ করা হবে অত্যাধুনিক হেলিপ্যাড। অন্য সব অফিসেও হেলিপ্যাড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে- জানালেন স্কয়ার এয়ার লিমিটেডের পরিচালক প্রকৌশলী আহমেদ ভুঁইয়া।
স্কয়ার সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আমেরিকার বেল হেলিকপ্টার কোম্পানি ৪০৭ সিরিজের একটি হেলিকপ্টার তৈরি করে স্কয়ারের জন্য। সেটি কিনে নেয় স্কয়ার এয়ার লি.। গত মার্চে ঢাকায় সেটি স্কয়ারের সঙ্গে যুক্ত হয়। হেলিকপ্টারটি ভেতরে পাঁচজনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। একেকজন ২০ কেজি করে পণ্য ও লাগেজ পরিবহন করতে পারেন। অবশ্য এ হেলিকপ্টারটি স্কয়ার হাসপাতালের জন্যেও ব্যবহার করা হয়।
স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান কার্যালয়ের অ্যান্থনি প্রিন্স বলেন, আমাদের হেলিকপ্টার সার্ভিসে স্যাররা দূরের অফিসে নিয়মিত যান। মিটিং করেন। আবার কাজ শেষে ফিরে আসেন। সড়কপথে যাওয়া সময়সাপেক্ষ। যানজট ও অনিরাপদ সড়ক- এ কারণে এখন আর গাড়িতে তারা দূরের পথে যান না। ভালুকায় আমাদের টেক্সটাইল কোম্পানি রয়েছে। সেখানে হেলিকপ্টারেই যান। ভাুলকা হেলিকপ্টার নামার জন্য বড় মাঠ রয়েছে। কালিয়াকৈরে স্কয়ারের ফার্মাসিউটিক্যালসের অফিস ও ফ্যাক্টরি। সেখানেও তারা যান হেলিকপ্টারে। কালিয়াকৈরে হেলিকপ্টার নামার জন্য বড় মাঠ রয়েছে। পাবনায় রয়েছে রাঁধুনি ও রুচিসহ বিভিন্ন পণ্যের ফ্যাক্টরি। গবাদি পশু ও ওষুধ তৈরির ইউনিটও সেখানে। সিলেটেও নির্মাণ হচ্ছে রিসোর্ট। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় স্কয়ারের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও এমডিসহ পরিচালকরা যান।
স্কয়ারের আরেক কর্মকর্তা বললেন, যানজট এবং অনিরাপদ সড়কের কারণে স্যাররা এক প্রকার গাড়ি চড়া ছেড়েই দিয়েছেন। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে গাড়িতে চড়েন না। দুর্ভোগ ও কষ্ট কমাতে ২০০৭-২০০৮ সালে তারা একটি হেলিকপ্টার কেনার চিন্তা করেন। এখন বহরে একটি হেলিকপ্টার থাকলেও ভবিষ্যতে স্কয়ার এয়ার লিমিটেডের আরও বৃহৎ পরিসরে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
0Shares

COMMENTS