Saturday - May 18, 2024 8:07 PM

Recent News

অল্পের জন্য…

ইশতিয়াক পারভেজ : শেষ বলে চাই তিন রান। দেশজুড়ে উত্তেজনা। দু’রান হলে টাই। বল ছুড়লেন পেরেরা। ফুল টস। হাঁকালেন এনামুল  
। বল উঠে গেল মাথার ওপরে আকাশে। সহজে তা লুফে নিলেন পেরেরা নিজেই। লঙ্কান শিবিরে আনন্দ। মাথায় হাত বাংলাদেশ শিবিরে। ইশ! অল্পের জন্য ফসকে গেল জয়টা।
এশিয়া কাপের ফাইনালে মাত্র ২ রানের পরাজয় বাংলাদেশের জন্য এখনও দুঃস্বপ্নের মতো। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ফিরে এলো সেই দুঃস্বপ্নের রাত। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিজয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতেই হেরে গেল বাংলাদেশ। লঙ্কানদের ১৬৮/৭ রানের জবাব দিতে নেমে শেষ ও ম্যাচের ১৯তম ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ১৭ রান। ক্রিজে এনামুল হক বিজয় ৪৪ ও ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন ফরহাদ রেজা। বোলার থিসারা পেরেরা প্রথম বলটিতেই এনামুল হক বিজয় চার হাঁকান। দ্বিতীয় বলে ২ রান যোগ করেন এই ব্যাটসম্যান। ১৯.৩ ওভারে ফরহাদ রান আউট হন সেই সঙ্গে কোন রানও যোগ হয়নি। এরপর ১৯.৪ ওভারের সময় বিজয়ের ব্যাটে আবারও চার, পরের বলেও চার। হাঁকান বিজয়। ওভারে  শেষ বলে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন ৩ রান। শেষ পর্যন্ত হলো না! বিজয় আউট হলেন ৫৮ রানে।  সেই সঙ্গে সাগরিকা ঢেকে গেল ২০১২ সালে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ রানে হারার বেদনায়। বাংলাদেশের স্কোর ১৬৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে। এই হারের পিছনে কারণ কি? বরাবরের মতোই বাংলাদেশের ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতাকে বড় করে দেখেন ক্রিকেট বোদ্ধারা। অনেকেই দায়ী করছেন এনামুলের স্লো ব্যাটিংকেও। আবার ফরহাদকে সেই সময় ব্যাটিংয়ে নামানোটাকেও দেখছেন কেউ কেউ পরাজয়ের কারণ। তবে অধিনায়ক মাশরাফি মনে করেন এখানে দুর্ভাগ্যটাই বড় কারণ। 
গতকালও টি-টোয়েন্টি দলের নয়া অধিনায়ক মাশরাফি টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাট করতে নেমে কুশল পেরেরার ৬৪ রানে ভর করে বাংলাদেশকে ১৬৮ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল লঙ্কানরা। ১৬৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও শামসুর রহমান শুভ। ওপেনিং জুটিতে ৩৭ বলে আসে ৫২ রান। শুভ ২২ রানে আউট হলে এই জুটি ভাঙে। এরপর তামিম ইকবাল ও এনামুল হকের জুটির  দৈর্ঘ্য মাত্র ১২ রানের। তামিম ২৫ বলে ৩৫ রান করে ফিরেছেন দুর্দান্ত এক ক্যাচআউট হয়ে। সেই সময় দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের হয়ে আইপিএল’র একমাত্র ও দামি ক্রিকেটার সাকিব ৪৩ রানের জুটি বাঁধেন। কিন্তু আলো জ্বালিয়ে আঁধারও উপহার দেন সাকিব। সাকিব যখন আউট হন তখন দলের জয়ের প্রয়োজন ছিল ৩৯ বলে ৬২ রান। সেখান থেকেই ম্যাচে ছড়িয়ে পড়ে টানটান উত্তেজনা। নাসির এসে বিজয়ের সঙ্গে ২৫ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু বিধিবাম ১৫ বলে ১৬ রান করে নাসিরও ধরেন সাজঘরের পথ। মালিঙ্গার সেই ওভারটিতেই অনেকটা নিভে আসে বাংলাদেশের জয়ের আশা। 
নাসিরের  বিদায়ের পর ব্যাট হাতে এনামুলের সঙ্গী হন ফরহাদ রেজা। ফরহাদ-এনামুল জুটিতে ২৪ রান এলেও এই জুটিতে ৭ রানের অবদান রাখেন ফরহাদ। ৫ বল খেলে তিনি ৭ রান করেন। কিন্তু তখন ৩ বছর পর দলে ফেরা একজনকে নামানো কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শেষের দুঃস্বপ্নের গল্পটার বীজ হয়তো সেখানে বপন হয়েছিল। এনামুল ম্যাচের শেষবলে আউট হন। তার ব্যাট থেকে আসে ৬৯ বলে ৫৮ রান। নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলতে এনামুল হক বিজয় হাঁকিয়েছেন ৭টি চারের মার। বাংলাদেশের গোটা ইনিংস জুড়ে এসেছে মাত্র দু’টি ছক্কার মার। এর মধ্যে একটি সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে অন্যটি হাঁকিয়েছেন নাসির হোসেন।মানবজমিন

0Shares

COMMENTS