Saturday - May 18, 2024 8:15 PM

Recent News

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতীয় ঐক্যগড়ে তুলতে হবে : সিলেটে নাগরিক সংলাপে আবু তাহের

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতীয় ঐক্যগড়ে তুলতে হবে : সিলেটে নাগরিক সংলাপে আবু তাহের

ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা বন্ধ এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যে ও স্বদেশে ফেরত পাঠাতে সম্মিলিতপ্র্রচেষ্টার বিকল্প নেই। এবিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার জন্য নিজেদের মধ্যে জাতীয় ঐক্যগড়ে তোলতে সরকারকেই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত ১ নভেম্বর বুধবার বিকেলে সিলেটে ‘রোহিঙ্গা: অতীত-বর্তমান ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘সিলেট রিপোর্ট ডটকম’ এর উদ্যোগে নগরীর মধুবনস্থ সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আলোচকগণ রাখাইন প্রদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে বেসরকারী উদ্যোগ বিশেষ করে সিলেটের প্রবাসী ও আলেম উলামাদের ভূমিকা প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউর্ইয়ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশন-এর সিইও আবু তাহের। সিলেট রিপোর্ট সম্পাদক মুহাম্মদ রুহুল আমীন নগরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে প্যানেল আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষবিদ লে.কর্নেল সৈয়দ আলী আহমদ, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহ সভাপতি সেলিম আউয়াল, দৈনিক নয়াদিগন্তের সহ সম্পাদক আবুল কালাম, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, নূরবিডি ডটকমের সম্পাদক সৈয়দ শামছুল হুদা। মূখ্য আলোচক ছিলেন গবেষক ও কবি মুসা আল হাফিজ। অন্যান্যের মধ্যে সংলাপে অংশ নেন অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা মনজুরে মাওলা, সাংবাদিক শফিক আহমদ শফি, লেখক শামসীর হারুনুর রশীদ, মাওলানা নুরুয্যামান সাঈদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক এম সাইফুর রহমান তালুকদার, শাহিদ হাতিমী, সৈয়দ উবায়দুর রহমান, কায়সান মাহমুদ আকবরী, সৈয়দ মাশহুরুল হুদা উসামা, রাসেল মাহফুজ, জুয়েল আহমদ উদয়, কামরুল ইসলাম মাহি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিশেষ মুনাজাত করা হয়। সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু তাহের বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমতকে কাজে লাগানোর দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। এতে ব্যর্থহলে বাংলাদেশকেই খেশারত দিতে হতে পারে। তাই আমরা সরকারকে বলছি দেশের জনগন এই ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ। সরকারের উচিত জনগণকে সাথে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা। এতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের পক্ষে চাপপ্রয়োগ করাটা আরো সহজ হবে। মানবিক দৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মুসলিম বিশ্বকে হযরত ওমরের মতো শাসক হতে হবে। এই সংলাপের জন্য অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিলেট রিপোর্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে সিলেট রিপোর্ট-এর পক্ষ থেকে ‘প্রবাসে স্বদেশ চিন্তা’ সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।
সংলাপে বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ ছাড়া মিয়ানমারকে আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন ও গণহত্যা বন্ধে বাধ্য করা যাবে না। শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতেও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ জরুরী। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে যে নীতি নিয়েছে, তা কেন অগ্রহণযোগ্য, সেটা বিশ্বসম্প্রদায়কে বোঝাতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে এখন এটা তুলে ধরা জরুরী যে দেশটির রোহিঙ্গাবিরোধী নীতির কারণেই দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাটি চলছে। এই সমস্যার কোনো দায় বাংলাদেশের না থাকলেও জনবহুল এই দেশটিকে ১০ লাখ শরণার্থীর ভার বইতে হচ্ছে এবং এর একটি স্থায়ী সমাধান জরুরী। মিয়ানমার শুরু থেকেই আরাকান রাজ্যে বর্তমানে চলমান রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান ও গণহত্যাকে ‘মুসলিম জঙ্গিদের’ তৎপরতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে আসছে। সফল ও কার্যকর কূটনীতিই পারে এ ধরনের ভুলগুলো ভেঙে দিতে। আমরা আশা করছি, সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি সামগ্রিক ও কার্যকর কূটনৈতিক কৌশল গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।বক্তারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতার কথা তুলে ধরে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, যথাযথ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবেই বিষয়টি সরকারের দেখা উচিত। বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো কূটনীতি নেই বলেলই চলে। বিরোধী দল সহ দেশের সর্বমহলের নিকট স্বীকৃত বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে ক’টনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। মুসলিমবিশ্বসহ চীন-রাশিয়ার সাথে আলোচনা করে মিয়ানমারের প্রতি আরো কঠোর হতে হবে। রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকারসহ নিজ দেশে তাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের সরনাপন্ন হতে হবে। এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকেই এগিয়ে আসা উচিত। সকল রাজনৈতিক দল সমুহকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা সময়ের দাবি। এখনই যদি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করা না হয়, তাহলে এরা বাংলাদেশের জন্য বুঝা হয়েই থাকবে! বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের সাময়িক জায়গা দেয়াটা মানবিক দৃষ্টি কোন থেকে হয়েছে, এটাকে স্থায়ী করা হলে বাংলাদেশই ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করেন তারা। বিদেশীরা (জাতিসংঘ) রোহিঙ্গাদের সহায়তার আশ্বাস দিলেও মিয়ানমারকে কোন রকম চাপ দিচ্ছেনা এর কারণ কি?
পাবর্ত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কোন প্রকার ষড়যন্ত্র যেনো না হয়, এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের স্ত্রী এবং তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোগান মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে কক্সবাজারে এসেছেন, সহযোগিতা করেছেন যারা সকল মহলকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

0Shares

COMMENTS