বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ মহাকাশে রেখে যেভাবে ফিরলো ফ্যালকন-৯ (ভিডিও)
http://www.ajkalnewyork.com/newsite/2018/05/13/97641.html#.WvdZHaQvwdU
ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে পৌঁছে দিয়ে ফিরে এলো এটি বহনকারী রকেট ফ্যালকন-৯ ব্লক ফাইভ। আল্টানটিক মহাসাগরের বুকে ভেসে থাকা ড্রোন জাহাজে সফলভাবে অবতরণ করে এটি।
এর আগে বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোররাত ২টা ১৪ মিনিটে বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটটি বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোররাত ২টা ৪৭ মিনিটে এক টুকরো বাংলাদেশকে রেখে আসে তার নিজস্ব কক্ষপথে।
ফ্লোরিডার স্বচ্ছ আকাশে প্রায় সাত মিনিট স্যাটেলাইটটি দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গায়ে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকার রঙের নকশার ওপর ইংরেজিতে লেখা রয়েছে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু ১। বাংলাদেশ সরকারের একটি মনোগ্রামও সেখানে রয়েছে।
ফ্রান্সের মহাকাশ সংস্থা থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস নির্মিত ৩ দশমিক ৭০ টন ওজনের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি সফলভাবে উৎক্ষিপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে মহাকাশ রাজত্বে অংশীদার হলো বাংলাদেশ। নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ ঘটল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিজ কক্ষপথে পরিচালিত হওয়ার পর বাংলাদেশে সম্প্রচার যোগাযোগে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট সেবা বিস্তৃত করতে ভূমিকা রাখবে এটি।
মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের অবস্থান হবে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। বাংলাদেশের নিজস্ব কক্ষপথ নেই বলে রাশিয়া থেকে ১৫ বছরের জন্য কক্ষপথটি ভাড়া নেয়া হয়েছে। এই কক্ষপথ থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও সার্কভুক্ত সব দেশ এবং ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও কাজাখস্তানের কিছু অংশ এই স্যাটেলাইটের আওতায় আসবে।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মূল অবকাঠামো তৈরি করেছে ফ্রান্সের মহাকাশ সংস্থা থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস। স্যাটেলাইট তৈরির কাজ শেষে গত ৩০ মার্চ এটি উৎক্ষেপণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাঠানো হয়। সেখানে আরেক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটে করে আজ স্যাটেলাইটটি যাত্রা করে মহাকাশে।
স্যাটেলাইটটি তৈরি ও ওড়ানোর কাজ বিদেশে সম্পন্ন হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বাংলাদেশ থেকে। এ জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুরে তৈরি গ্রাউন্ড কনট্রোল স্টেশন (ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা) স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের মূল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। আর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হবে রাঙামাটির বেতবুনিয়া গ্রাউন্ড স্টেশন।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি বিভিন্ন ধরনের মহাকাশ যোগাযোগের কাজে ব্যবহার করা হবে। এ ধরনের স্যাটেলাইটকে বলা হয় ‘জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট’। পৃথিবীর ঘূর্ণনের সঙ্গে সঙ্গে এ স্যাটেলাইট মহাকাশে ঘুরতে থাকে।