Saturday - April 27, 2024 6:30 PM

Recent News

‘ইউএস গভমেন্ট সাট ডাউন’

‘ইউএস গভমেন্ট সাট ডাউন’

ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অচল গেছে। বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো সংক্রান্ত একটি বিলে সিনেটররা একমত হতে না পারায় ২০১৩ সালের পর ফের স্থগিত হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কার্যক্রম। স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাতের মধ্যেই বিলটি সিনেটে পাসের বাধ্যবাধকতা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তেও এ নিয়ে দুই বড় দলের সিনেটররা বিষয়টিতে একমত হতে পারেননি। ভোট পড়েছে ৫০-৪৯। এরপর সিনেটে বিষয়টি নিয়ে প্রবল দরকষাকষি হলেও সিনেটররা একমত হতে পারেননি।

বিলটি পাসের জন্য সিনেটে এ সংক্রান্ত ভোটাভুটিতে ৬০টি ভোট প্রয়োজন ছিল। তা না হওয়ায় সিএনএন- সংবাদের শিরোনাম করে, ‘ইউএস গভমেন্ট সাট ডাউন’ এধরনের আরেকটি শিরোনাম ছিল, ‘ ল’মেকারস স্টিল সার্চিং ডিল’। ফলে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে জাতীয় নিরাপত্তা, পোস্ট, বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, হাসপাতাল, দুর্যোগ সহায়তা, কারাগার, আয়কর ও বিদুৎ উৎপাদনের মতো অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতগুলো চালু রয়েছে।

মার্কিন সিনেটে বিলটি পাস করানোর মতো পর্যাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টির। দলটির হাতে আছে ৫১টি আসন। ফলে বিলটি নিয়ে তাদের ডেমোক্র্যাটদের কাছে যেতে হয়। আবার ডেমোক্রেট শিবিরে এ নিয়ে বিভক্তি রয়েছে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, সিনেট অধিবেশনের কয়েক ঘণ্টা আগেও মনে হচ্ছিল সিনেটররা প্রস্তাবিত ওই বিলে একমত হতে পারবেন না। ফলে সরকারি কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার বিষয়টি অনেকটা অবশ্যম্ভাবী ছিল। সর্বশেষ ২০১৩ সালে টানা ১৬ দিনের জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।  ২০১৩ সালের আগে ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ২৭ দিন শাট ডাউন চলেছিল। সেবার স্বাস্থ্য বীমা নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতবিরোধের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছিল।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে জাতীয় উদ্যান, জাদুঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি পাসপোর্ট ও ভিসা প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়; যা পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সরকারি কার্যক্রম স্থগিতের আগেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন আর্থিক রেটিংস এজেন্সি ‘স্যান্ডার্ট অ্যান্ড পুওর’ এর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বেথ আন বোভিনো। তিনি বলেন, এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলবে। শাট ডাউনের প্রত্যক্ষ প্রভাবের মধ্যে রয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় সাত লাখ সরকারি কর্মচারীর উৎপাদন অপ্রয়োজনীয়ভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। এই শ্রমিকদের সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হবে। অর্থাৎ সরকার কার্যক্রম শুরু না করা পর্যন্ত তাদের বিনা বেতনে ছুটিতে থাকতে হবে। তাদের বেতন দেওয়া হলেও সরকার উৎপাদন বঞ্চিত হবে। কেননা, কাজ ছাড়া বসে থাকা সময় কখনও ফিরে আসে না।

বাজেট বরাদ্দে এবার গোল বাধে শিশু অবস্থায় প্রবেশ করেছিলেন কমপক্ষে সাত লাখ অভিবাসী। এদেরকে ইংরেজিতে ‘ড্রিমারস’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তাদের জন্য অস্থায়ী আবাসিক মর্যাদা দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামার সেই কর্মসূচি বাতিল করে এসব অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়ার ঘোষণা দেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কিন্তু ডেমোক্রেটরা এর বিরোধিতা করছে। তারা চাইছে কোনোভাবেই যেন এসব অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়া না হয়। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতায় আসে নি। এ নিয়েই মূলত দ্বন্দ্ব উভয় পক্ষে।

গত সেপ্টেম্বরে বারাক ওবামার ওই কর্মসূচি বাতিল করার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একই সঙ্গে মার্চ পর্যন্ত তিনি কংগ্রেসকে সময় দেন, এর পরিবর্তে কোনো কর্মসূচি আনতে। এ ইস্যুতে ডেমোক্রেটদের কাছ থেকে সমর্থন আদায়ে চেষ্টা করছিলেন রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও কংগ্রেস সদস্যরা। ট্রাম্প তার নতুন বাজেটে সীমান্ত নিরাপত্তা কঠোর করতে অর্থ সহায়তা চাইছেন। এর আওতায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ। রিপাবলিকানরা বিলটিতেএকটি ছয় বছর মেয়াদী স্বাস্থ্য বিষয়ক ইনস্যুরেন্স কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটা শুধু শিশুদের জন্য প্রযোজ্য এবং এ সুবিধা পাবে শুধু নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো।

0Shares